বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? কিছুদিন ধরেই ভাবছিলাম, শহরের কোলাহল থেকে একটু দূরে, প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যাই। অবশেষে, সুযোগ পেয়ে চলে গেলাম গাজীপুরের শ্রীপুরে অবস্থিত রাস রিসোর্টে।
গাজীপুর শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই রিসোর্টটি। চারদিকে সবুজের সমারোহ, পাখির কলরব আর শান্ত পুকুরের মনোরম দৃশ্য মনটাকে একেবারে জুড়িয়ে দেয়। যারা একটু নিরিবিলি পরিবেশে সময় কাটাতে চান, তাদের জন্য এটা একটা আদর্শ জায়গা।
কীভাবে যাবেন?
ঢাকা থেকে গাজীপুর চৌরাস্তা হয়ে শ্রীপুর যেতে হয়। শ্রীপুর থেকে অটো বা সিএনজি নিয়ে সহজেই রাস রিসোর্টে পৌঁছানো যায়। নিজস্ব গাড়ি থাকলে তো কথাই নেই!
যা যা দেখলাম:
রিসোর্টে ঢুকেই চোখে পড়ল বিশাল এক লেক। লেকের চারপাশে সারি সারি গাছ, আর মাঝে মাঝে বসার জন্য সুন্দর বসার জায়গা। লেকের শান্ত জল আর চারপাশের সবুজ দৃশ্য দেখে মনটা এমনিতেই ভালো হয়ে যায়।
- কটেজ: রিসোর্টে বিভিন্ন ধরনের কটেজ রয়েছে। আমরা কাঠের তৈরি একটি কটেজে ছিলাম। কটেজগুলো বেশ পরিপাটি এবং আরামদায়ক। বারান্দায় বসে লেকের দৃশ্য দেখতে দেখতে সময় কীভাবে কেটে যায়, টেরই পাওয়া যায় না।
- পুকুর এবং মাছ ধরা: রিসোর্টের পুকুরে মাছ ধরার ব্যবস্থাও আছে। যারা শখের মৎস্য শিকারী, তাদের জন্য এটা একটা দারুণ সুযোগ। আমরাও কিছুক্ষণ চেষ্টা করেছিলাম, তবে দুর্ভাগ্যবশত কোনো মাছ ধরতে পারিনি!
- শিশুদের খেলার জায়গা: শিশুদের জন্য এখানে সুন্দর একটি খেলার জায়গা রয়েছে। বিভিন্ন ধরনের রাইড আর খেলার সামগ্রী বাচ্চাদের আনন্দ দেয়।
- রেস্টুরেন্ট: রিসোর্টের নিজস্ব রেস্টুরেন্টে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ধরনের খাবারের ব্যবস্থা রয়েছে। আমরা দুপুরের খাবারে ভাত, মাছ, মাংস আর সবজি খেয়েছিলাম। খাবারের মান বেশ ভালো ছিল।
- প্রাকৃতিক পরিবেশ: রিসোর্টের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হলো এর প্রাকৃতিক পরিবেশ। চারদিকে শুধু সবুজ আর সবুজ। পাখির ডাক, ঝিঁঝি পোকার শব্দ, আর হালকা বাতাস – সব মিলিয়ে একটা অন্যরকম পরিবেশ তৈরি করে।
কিছু টিপস:
- ছুটির দিনে গেলে আগে থেকে কটেজ বুক করে যাওয়াই ভালো।
- সঙ্গে হালকা কিছু খাবার আর পানীয় নিয়ে যেতে পারেন।
- ক্যামেরা নিতে ভুলবেন না, কারণ এখানে অনেক সুন্দর সুন্দর ছবি তোলার সুযোগ রয়েছে।
- প্রকৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকুন, রিসোর্টের পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন।
শেষ কথা:
রাস রিসোর্ট শহরের কোলাহল থেকে দূরে, প্রকৃতির মাঝে এক টুকরো শান্তি। একদিনের জন্য হলেও, এই রিসোর্টটি ঘুরে এসে মনটা একেবারে সতেজ হয়ে যায়। যারা প্রকৃতির কাছাকাছি সময় কাটাতে চান, তাদের জন্য রাস রিসোর্ট একটি চমৎকার গন্তব্য।
আশা করি, আমার এই ব্লগটি আপনাদের ভালো লেগেছে। আপনাদের যদি রাস রিসোর্ট সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন থাকে, তাহলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।
সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আবার দেখা হবে নতুন কোনো ভ্রমণ কাহিনি নিয়ে।